ঘোড়ামারা_দ্বীপে ভাগ্যের পরিস্থিতি পরিহাস মানুষকে বদলায়। কাজ করতে গেলে যেমন শ্রমের মূল্য বোঝা যায় তেমনি তাতে এমন অনেক অভিজ্ঞতা হয় যা জীবনে চলার পথে খুবই প্রয়োজনীয়। ঝড়ে ঘর নিশ্চিহ্ন। শেষ করে দিয়েছে রোজগারের জায়গাটুকু ও। চরম আর্থিক অনটন প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে।ফলে এম এ ফার্স্ট ক্লাস, ইতিহাস অনার্স থেকে পলিটেকনিক পাশ করা যুবক। রোজগারের আশায় এখন 100 দিনের কাজে ঝুকেছেন এরা। কোদাল ও ঝুড়ি নিয়ে নদীর বাঁধের মাটি কাটার কাজ করছেন। হুগলি নদী আর বঙ্গোপসাগরে মাঝখানে জেগে থাকা ছোট্ট একখানি দ্বীপ ঘোড়ামারা পা রেখে চোখে পরলো এমনই চিত্র।
জায়গাটি সাগর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে। কিন্তু নদী ভাঙ্গনে ঘোড়ামারা এখন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ।পান বরজের ও ধান বিক্রি প্রধান অর্থনৈতিক কাজ। বুলবুলের ধাক্কায় আগেই আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল। তা সামলে উঠার আগে
আমফান ঝড় এসে সব শেষ করে দিয়ে গেল। হাটখোলার গা ঘেঁষে ভাঙ্গা নদী বাঁধ মেরামতের কাজ চলছিল। সেখানেই কোদাল ও ঝুড়ি হাতে নিয়ে দেখা হলো যুবক তুফান মাইতির সঙ্গে। সারা গায়ে কাদা। বললেন,
মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক এর ছাত্র পড়াই। আর্থিক অনটন। তাই এখন আমি এই মাটিকেই মাটি তোলার কাজে ব্যবহারে করতে ইচ্ছে। এমন পরিস্থিতি হবে ভাবতে পারিনি। তুফান বললেন, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক লেটার মার্ক নিয়ে পাশ করেছি। বাবার দুই বিঘা পানের বরোজের রোজগারে পড়াশোনা চালছিল। স্নাতক স্তরে অংকে অনার্স নিয়ে পড়ছি। এরপর অংক নিয়ে ( “এম এসসি” ফার্স্ট ক্লাস) পাস করছি। বাবার কথায় কাকদ্বীপের একটি বি এড কলেজে ভরতি হয়ছি কিন্তু লকডাউনে বাড়ি চলে আসতে হলো।
টিউশন করতাম, তাও বন্ধ। কেউ টাকা দিতে পারছি না। পরিবারের রোজগারের জায়গায় পানের বরজ ঝড়ে আমফানঝড়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কি করে চলবে এখন। তাই মাটি কাটার কাজ করছি। দেখলাম তুফানের বাবা-মা দুজনই ছেলের সঙ্গে কাজ করছেন। বাংলায় স্নাতক তাপস কারকের একই অবস্থা। বললেন, সংসার চালাতে পারছি না। পানের বরজ ছিল। এছাড়া বাড়িতে মাধ্যমিক ছাত্র পড়াতাম। সব শেষ হয়ে গিয়েছে। এক বেলায় হাড়ি চাপালেও রাতে জল খেয়ে থাকি। কারণ, জমানো কোন পয়সা নেই। এখন আর শিক্ষিত বলে লজ্জা পেলে পেট ভরবে না। তাই প্রাণ বাঁচাতে মাটির কাজ করতে এসেছি। ভূগোলে অনার্স নিয়ে পড়ছেন শিবশংকরপাল। পলিটেকনিক পাশ করে চাকরি পরীক্ষা দিচ্ছেন বিকাশচন্দ্রদাস। দুজনের মাথায় মাটি বোঝাই ঝুড়ি। জানালেন, মনে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এখন এই কাজ করা ছাড়া বাঁচার উপায় নেই।
নয়াদিল্লি, ১৫ সেপ্টেম্বর: একবার পশুর অনাক্রম্যতা পাওয়ার পরে কোপনোভাইরাস উপন্যাসটি মেনে চলতে পারে এবং নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুযুক্ত দেশগুলিতে একটি মৌসুমী ভাইরাসে পরিণত হতে...